খাবার চাওয়ায় শরীরে গরম পানি ঢেলে দিলো সৎ মা, প্রাণ গেল প্রতিবন্ধী কিশোরের

এবার বরিশালের হিজলায় গায়ে গরম পানি ঢেলে মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী এক কিশোরকে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে সৎ মায়ের বিরুদ্ধে।

আজ মঙ্গলবার ২৪ জানুয়া‌রি সকালে গুরুতর আহত শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী ওই কিশোরের মৃত্যু হয়। নিহত কিশোরের নাম মো. সাইদুল (১৪)। সে উপজেলার মেমানিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বাউশিয়া গ্রামের জেলে নুরু মীরার ছেলে।

এদিকে নিহত কিশোরের ভাই সিদ্দিক বলেন, আমি মাছ শিকারে নদীতে ছিলাম। গতকাল সোমবার ২৩ জানুয়ারি বাড়ি এসে শুনতে পাই সৎ মা ফাহিমা ভাই সাইদুলের শরীরে গরম পানি দিয়েছে।

কয়েকদিন আগে তার শরীরে গরম পানি ঢেলে দেওয়ায় ঝলসে গেলেও চিকিৎসা করতে দেয়নি। আমি অসুস্থ ভাইকে গতকাল সন্ধ্যায় হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করাই। চিকিৎসকরা তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

আজ মঙ্গলবার ২৪ জানুয়া‌রি সকালে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে সাইদুল মারা যায়। পরে তাকে থানায় নেওয়া হয় এবং পুলিশ মর‌দে‌হের ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। প্রতিবেশি ইউনুস সরদার জানান, জন্ম থেকেই সাইদুল শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী। জন্ম থেকে বিছানায় শুয়ে থাকতো। এক বছর আগে তার মা মারা যায়। ৬ মাস আগে তার বাবা আবার বিয়ে করে। তার বাবা ও ভাই মাছ ধরে খায়। তারা বেশিরভাগ সময় মাছ শিকারে নদীতেই থাকে।

এ সময় ইউনুস সরদার বলেন, গতকাল সোমবার ২৩ জানুয়ারি বিকেলে সাইদুল বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রতিবেশিরা তাকে দেখতে যায়। সেখানে গিয়ে তারা জানতে পারে যে, সাইদুল খেতে চেয়েছিলো, তখন তার সৎ মা ফাহিমা গরম পানি ছুড়ে মেরেছে। এতে সাইদুলের শরীর ঝলসে যায়। এ বিষয়টির কতটুকু সত্য বলতে পারবো না জানিয়ে ইউনুস সরদার আরও বলেন, পরে কয়েকশ মানুষ বাড়িতে উপস্থিত হলে সাইদুলের সৎ মা পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইউনুস মিঞা বলেন, জন্ম থেকে বিছানায় পড়ে ছিলো। শরীরে ঘা ও চামড়া উঠে গেছে। এটা গরম পানিতে হয়েছে কি-না, তা চিকিৎসক বলতে পারবেন। আপাতত অপমৃত্যুর মামলা দিয়ে ময়না তদন্ত করা হবে। প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ওসি।

Back to top button