প্রেমিকের বাসায় তর্কাতর্কি দুই প্রেমিকার, প্রাণ গেল একজনের

মুন্সীগঞ্জে ত্রিভূজ প্রেমের বলি হয়েছে এসএসসি পরীক্ষার্থী জেসি। নিজ বাসার ছাদে কথা কাটাকাটির পর একপর্যায়ে প্রেমিক ও তার অপর প্রেমিকার মারধরে প্রাণ যায় এই তরুণীর।

বুধবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলামের আদালতে প্রেমিকা আদিবা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এদিকে প্রেমিক বিজয়কে গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান জোরদার করেছে।

মুন্সীগঞ্জের এলবার্ট ভিক্টোরিয়া যতীন্দ্র মোহন (এভিজেএম) স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী জেসি মাহমুদের মৃত্যুরহস্য উদঘাটন হয়েছে। ত্রিভূজ প্রেমের বলি হয়েছে জেসি। স্বীকারোক্তি থেকে এমনটাই জানা গেছে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, শহরের কোর্টগাঁওয়ের এইচএসসি পরীক্ষার্থী বিজয় রহমানের সঙ্গে তার প্রেম ছিলো। এছাড়াও বিজয় প্রেম করছিলো সহপাঠী নয়াগাঁও এলাকার পঞ্চসার ইউপির সদস্য জাহিদ হাসানের মেয়ে আদিবার আক্তারের সঙ্গেও। বিজয়ের বাবা আরিফুর রহমান মুন্সীগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য। বিজয় ও জেসির মধ্যকার বেশ কিছু প্রেমের একান্ত আলাপচারিতা ম্যাসেঞ্জারে কথোপকথনের আদিবাকে পাঠায় জেসি। সেটি দেখে আদিবা বিজয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

বিষয়টি নিয়ে তারা ৩ জন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একসঙ্গে বিজয়ের বাসার ৫ম তলার ছাদে একত্রিত হয়। সেখানে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আদিবা ও বিজয় উভয়ই জেসিকে মারধর করে। ধস্তাধস্তির পর বিজয় গলা চেপে ধরে মাথা দেয়ালের সঙ্গে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই জেসি অচেতন হয়ে পড়ে। জেসির মোবাইল ও জুতা ছাদ থেকে বিজয় নিচে ফেলে দেয়।

এরপর জেসিকে কোলে করে এনে ভবনের নিচে মাটিতে রেখে জেসি লাফ দিয়েছে এমন নাটক সাজায় বিজয়। পরে কয়েকজনের সহায়তায় জেসিকে হাসপাতালে এনে পরে বিজয় সরে পড়ে।

এসব তথ্য দিয়ে মুন্সীগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব জানান, বুধবার সন্ধ্যায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেমিকা আদিবা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এরপর তাকে কারাগারারে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে জেসির ভাই শাহরিয়ার জিদান বাদী হয়ে বিজয় ও আদিবাকে আসামি করে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। পুলিশ পঞ্চসার ইউপির সদস্য জাহিদ হাসানের মেয়ে আদিবাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। স্থানীয়রা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছে।

ময়নাতদন্ত শেষে বুধবার বাদ মাগরিব নামাজের জানাজা শেষে নিজ গ্রাম সদর উপজেলার দক্ষিণ কেওয়ার কবরস্থানে জেসিকে চিরনিন্দ্রায় শায়িত করা হয়।

Back to top button