সিলেটকে যারা ‘বুড়োর দল’ বলেছিল এটা তাদের জন্য শিক্ষা: মাশরাফির স্ত্রী
মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা বিপিএলের প্রথম তিন আসরের চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক। তৃতীয়বার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে শিরোপা জিতিয়েছিলেন খুব ভালো দল না নিয়েও। এক আসর বিরতির পর পঞ্চম আসরে রংপুর রাইডার্সের হয়ে আবার তিনি ট্রফি উঁচিয়ে ধরেন।
বিপিএলের ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত তিনিই সফলতম অধিনায়ক। তার নেতৃত্ব, পারফরম্যান্স আর ব্যক্তিগত ঝলকের নানা নজিরের স্বাক্ষী হয়ে আছে বিপিএলের আসর থেকে আসর।
এবারও সাদামাটা সিলেটকে যেভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন, চোট-আঘাতের ধাক্কা সামলে নিজেও যেভাবে বোলিং-ব্যাটিং করে চলেছেন, তাতে তার জাদুর ছোঁয়া দেখছেন অনেকেই।
যদিও টুর্নামেন্ট শুরুর আগে সিলেটের দল দেখে হাসাহাসি করা লোকের সংখ্যা নিতান্তই কম ছিল না। তবে স্ত্রী সুমনা হক সুমি বরাবরের মতো এই লড়াকু মানুষটির পাশে দাঁড়িয়ে তাকে সমর্থন দিয়ে গেছেন শেষ পর্যন্ত।
পারফর্ম তো করেছেনই, নেতৃত্বগুণে সাদামাটা সিলেট স্ট্রাইকার্সকে অপ্রতিরোধ্য বানিয়ে তুলেছেন বিপিএলের ফাইনালে। তারকাবহুল রংপুর রাইডার্সকে হারিয়ে সিলেটকে প্রথমবারের মতো বিপিএলের ফাইনালে তুলেছেন মাশরাফী।
অভিশপ্ত সিলেটের অভিশাপ খণ্ডন করেও নড়াইল এক্সপ্রেসকে শুনতে হচ্ছে – কবে অবসরে যাবেন তিনি? মাঠের খেলার চেয়ে ৩৯ বছর বয়সী ক্রিকেটেরের অবসরের বিষয়েই যেন বেশি আগ্রহ এখন, যা ভালো লাগছে না মাশরাফীপত্নী সুমনা হক সুমির।
সুমি বলেন, ‘বিপিএলের এমন একটা পিক মুহূর্তে এই কথাগুলো নিয়ে আমরা একটু সচেতন হই। এত অ্যাভেইলেবল করে না ফেলি, এই প্রশ্নটার সম্মুখীন হলে আসলে হবে কী, তার এত ডেডিকেশন, এত হার্ডওয়ার্ককে অসম্মান করা হবে। এত কিছু করার পরও, আপনি কবে অবসর নিচ্ছেন? – এমন প্রশ্ন খুব বেশি অপ্রাসঙ্গিক মনে হচ্ছে আমার। আমরা তাকে এই প্রশ্নটার সম্মুখীন না করি। তার মতো সে এসেছে, তার মতো ফাইট করছে। তার শরীরের বিষয়টা তার ওপরেই ছেড়ে দেই। সে যত দিন পারে, সামর্থ্যবান থাকে, তত দিনই খেলবে এবং তার প্রমাণ আমরা সবাই হয়তো পাচ্ছি। তাই তার সিদ্ধান্তটা আমরা তাকে দিয়েই জানি। এটা তার প্রতি সম্মান করা হবে। আর এটা তার জন্য ভালো, ক্রিকেটের জন্যও ভালো।’
আসর শুরুর আগ থেকেই সিলেট নিয়ে মজা করতে ছাড়েননি নেটিজেনরা। দেশীয় কোচ এবং দেশি ক্রিকেটারদের নিয়ে কতটা যেতে পারবে দলটি, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। মাঠের খেলায় হৃদয়-শান্ত-জাকিরদের জবাবগুলো তাই এখন বেশ উপভোগ করছেন সুমি।
সুমি বলেন, ‘সিলেট টিমটাকে যারা ‘বুড়ো টিম’, ‘রিহ্যাব সেন্টার’ এসব বলে আখ্যা দিয়েছিলাম, তাদের জন্য এটা একটা শিক্ষা। দেশি সেটআপ নিয়ে, দেশি ব্যাটার, বোলার, কোচ নিয়েই যে শিরোপার কাছাকাছি যাওয়া যায়, শিরোপা জিতে ফেলেছে এটা বলব না কিন্তু শিরোপার কাছাকাছি যে যাওয়া যায়, সে শিক্ষাটা আমরা পেলাম।’
তিনি যোগ করেন, ‘আমরা যারা বিভিন্ন নেতিবাচক মন্তব্য করেছিলাম, আমাদের মনে হয় মন্তব্য করার সময় একটু সচেতনভাবে মন্তব্য করি। হুটহাট কিছু না বলি, মিডিয়াতে কিছু না বলি। একটা টিমে যে এক্সপেরিয়েন্সের কত মূল্য তা আজ আমরা দেখলাম। আমরা এই কথাগুলো মনে রাখি, এই ম্যাচটার কথা মনে রাখি। সিলেটের এই অবস্থানটার কথা মাথায় রাখি।’