নিশাঙ্কা-আসালঙ্কার ব্যাটে হারল বাংলাদেশ
শ্রীলঙ্কার দুই ব্যাটারের ১৮৫ রানের জুটির কাছে নত স্বীকার করতে হয় বাংলাদেশ দলকে। গতকাল চট্টগ্রামে সিরিজ জয়ের লক্ষ্য ছিল স্বাগতিকদের, লঙ্কানদের লক্ষ্য ছিল সিরিজে ফেরার। এই ম্যাচে ৩ উইকেটে হার বাংলাদেশের। জয় ছিনিয়ে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ অলিখিত ফাইনালে রূপ দিল সফরকারীরা।
ম্যাচ হেরে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা ভালো শুরু করেছিলাম, কিন্তু তারা আমাদের থেকে ভালো ব্যাটিং করেছে। আশা করি পরের ম্যাচে আমরা বিশেষ কিছু করব।’ ব্যাটারদের দায় দেওয়া নাজমুল টসের সময় বলেছিলেন, ‘আমার মনে হয় এখানে ২৮০ থেকে ৩০০ রানের পুঁজি জয়ের জন্য ভালো সংগ্রহ।’ ব্যাটারদের নৈপুণ্যে ২৮৬ রান তুলেছিল বাংলাদেশ।
পরিসংখ্যানে দিকে তাকালে এই রানকে লড়াইয়ের জন্য যথেষ্ঠ বলা যায়। কারণ, জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে জয়ী দলের গড় সংগ্রহও যে ২৮৬ রান। তার ওপর প্রথম ওয়ানডেতে যেমন বোলিংয়ের প্রদর্শন দেখান বাংলাদেশের বোলাররা, তাতে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখে ফেলেন অনেকে।
আগের ম্যাচের ধারাবাহিকতায় দারুণ শুরু করেছিলেন শরিফুল-তাসকিন। নতুন বলের সুবিধা আদায় করে ৪৩ রানে সফরকারীদের ৩ উইকেট তুলে নেন দুই পেসার।
কত দ্রুত ম্যাচ শেষ হবে, সেই ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছিল তখন, তবে নিশাঙ্কা আর আসালাঙ্কার প্রতিরোধ সামনে অসহায় বাংলাদেশি বোলাররা। ফ্লাডলাইটের নিচে শিশিরের বাড়তি সুবিধা কাজে লাগিয়ে ১৮৩ বলে ১৮৫ রানের জুটি গড়েন দুজন। টসের সময় এম্ন প্রত্যাশার কথা ই তো জানান লঙ্কান অধিনায়ক কুশল পেরেরা। সেঞ্চুরি করা নিশাঙ্কাকে (১১৩ বলে ১১৪) তাসকিন যখন ফেরান, ততক্ষণে ম্যাচের ভাগ্য গড়া হয়ে যায়। পরের ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজ আসালাঙ্কাকে (৯৩ বলে ৯১) ফেরানোর পর জানিথ লিয়ানাগেকে আউট করে ম্যাচ কিছুটা জমিয়ে তোলেন, তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ১৭ বল আগে ম্যাচের ফলাফল চূড়ান্ত করে শ্রীলঙ্কা। হারের ম্যাচে বাংলাদেশের দশম বোলার হিসেবে ওয়ানডেতে উইকেটের সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তাসকিন।
তার আগে ব্যাট হাতে মাইলফলক ছুঁয়েছেন সৌম্য সরকার। ওপেনিংয়ে নেমে ৬৬ বলে ৬৮ রানের ইনিংস খেলার পথে বাংলাদেশি হিসেবে দ্রুততম দুই হাজার রানের ক্লাবে প্রবেশ করেন। শাহরিয়ার নাফিস ও লিটন দাসের লেগেছিল ৬৫ ইনিংস, সৌম্যর লাগে ৬৪টি। সৌম্যর কাছে রেকর্ড হারানোর ম্যাচে আবারও বিবর্ণ লিটনের ব্যাট। গত ম্যাচের মতো কালও ‘ডাক’ মারেন এই ওপেনার। ওয়ানডেতে এটি তার এটি ১৪তম বার। লিটন সর্বশেষ ফিফটি পেয়েছেন ১০ ম্যাচ আগে।
লিটন রানে ফিরতে না পারলেও দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে সৌম্যর সঙ্গে ৭৫ রানের জুটিতে দলকে বড় সংগ্রহের পথে রেখেছিলেন নাজমুল। তবে দুবার জীবন পেয়েও ফিফটির আগে (৪০) থামেন তিনি। গতকাল ‘জরুরি’ ছিল তাওহিদ হৃদয়ের রান পাওয়া। মাহমুদ উল্লাহ (০), মুশফিকুর রহিম (২৫), মিরাজ (১২) ইনিংস বড় করতে না পারলেও সেই আক্ষেপ ভুলিয়ে দেন তাওহিদ। চারে নেমে একপ্রান্ত ধরে খেলে ফিফটি তুলে নেন তিনি। অষ্টম উইকেট জুটিতে তাসকিনের সঙ্গে ২৩ বলে জুটিতে যোগ করেন ৫৯ রান। যেখনে তাসকিনের সংগ্রহ ১০ বলে ১৮ রান। ৯৬ রানে অপরাজিত থাকেন তাওহিদ। ১০২ বলের ইনিংস সাজান ৩টি চার ও ৫টি ছয়ে। তাতে ৭ উইকেটে দল ২৮৬ রানের পুঁজি পায়। যা জয়ের জন্য পর্যাপ্ত ছিল না।