‘আমাদের সিদ্ধান্তে চলচ্চিত্র ধ্বংস হবে না, লাভবান হবে’
সিনেমা হল টিকিয়ে রাখতে দরকার পর্যন্ত মানসম্মত ছবি। কিন্তু চাহিদার তুলনা সেইসব ছবি নির্মিত হচ্ছে না। তাই অনেকটা নিরুপায় হয়ে হিন্দি ছবি আমদানির পক্ষে মতামত দিচ্ছে শিল্পী সমিতি।
সংগঠনটির নেতারা বলছেন, তারা যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, সামগ্রিকভাবে এতে গোটা ইন্ডাস্ট্রি লাভবান হবে।
আমদানিতে হিন্দি ছবির অবাধ বিচরণ হলে দেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি ধ্বংস হয়ে যেতে পারে এই আশঙ্কা করছেন অনেকেই। তবে এমনটি ঘটবে না বলে দৃঢ়ভাবে জানিয়েছেন শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তার। তিনি বলেন, আমাদের সিদ্ধান্তে চলচ্চিত্র ধ্বংস হবে না, বরং লাভবান হবে।
আমদানিতে হিন্দি ছবি মুক্তি্র ব্যাপারে গেল সপ্তাহে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রদর্শক সমিতি সিনেমা হল বাঁচাতে মাসে একটি করে হিন্দি সিনেমা চায়। শিল্পী সমিতিসহ এফডিসির সকল সমিতি যদি চায় তবে এতে আমার কোনো আপত্তি নেই।
তথ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের পরে শিল্পী সমিতি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে শনিবার বিকেলে শিল্পী সমিতির ইলিয়াস কাঞ্চন, নিপুণ, রিয়াজ, ফেরদৌস, ইমন, সাইমণরা মিটিং করেন। সেখানে ছিলেন চলচ্চিত্র পরিবারের প্রধান চিত্রনায়ক আলমগীর। মিটিংয়ে হিন্দি ছবি মুক্তিতে অনাপত্তি জানায় শিল্পী সমিতির নেতারা। তবে তারা কিছু শর্তের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে নির্দিষ্ট সংখ্যক হিন্দি ছবি আমদানির পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন।
শর্ত প্রসঙ্গে নিপুণ বলেন, এখনই প্রকাশ করছি না। আমরা আলোচনার ভিত্তিতে সকলের মতামত নিয়ে এই শর্তগুলো দেব। এতে করে ইন্ডাস্ট্রি আগাবে। সিনেমা হলগুলো টিকে থাকবে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হিন্দি সিনেমা দিয়ে ব্যবসা করা নয়, সিনেমা হল টিকিয়ে রাখাই মূল উদ্দেশ্য। সিনেমা হল বাঁচলে প্রযোজকরা আরও বেশী ছবি বানাতে পারবেন। এতে করে লগ্নী উঠে আসার সম্ভাবনা থাকবে। নইলে ৬০টির মত হল চালু আছে তাও বন্ধ হয়ে যাবে।
এদিকে, নিপুণ দাবি করেছেন আমদানি ছবির লভ্যাংশের ১০ শতাংশ দিতে হবে শিল্পী সমিতিকে। এটিকে কেউ কেউ চাঁদাবাজি উল্লেখ করেছেন।
নিপুণ বলেন, এই টাকা যদি আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে নিতাম তাহলে সেটা চাঁদাবাজি বলা যেত। টাকা থাকবে শিল্পী সমিতির ফান্ডে। আমি শিল্পী সমিতি থেকে কিছু নিতে আসিনি। এসেছি কিছু দিতে। ইতোমধ্যে শিল্পীরা একটি ইফতার মাহফিল ও পিকনিকের মাধ্যমে সেই প্রমাণ পেয়েছে।
চিত্রনায়ক রিয়াজ বলেন, দেশের অনেকেই এখন সিনেমা বানাচ্ছেন না, কারণ সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে। হল চালু থাকলে তারা আবার সিনেমা নির্মাণে আসবেন। এখন সিনেমা বানিয়ে শুধুমাত্র ৩০ সিনেমা হলে চালালে তো প্রযোজকের অর্থ উঠবে না। যদি বিদেশি সিনেমা চালিয়ে সিনেমা হলের সংখ্যা বাড়ে তাতে সমস্যা দেখছি না। আমি মনে করি আমাদের এখানে বিদেশি সিনেমা মুক্তি পেলে নিজেদের মধ্যেও সুন্দর প্রতিযোগিতা তৈরি হবে।
রিয়াজ আরও বলেন, যদি শর্তসাপেক্ষে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দেশের বাইরের সিনেমা আনতে সহযোগিতা করি তাতে যদি সিনেমা হলে মানুষ আসে, হলের সংখ্যা বাড়তে থাকে, তাহলে আমাদের জন্যই ভালো হবে। আগামীতে হয়তো আমাদের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি দাঁড়িয়ে যাবে। যারা সিনেমা বানাবেন তারাও এর সুফল পাবেন। যদি সিনেমা হল বাঁচে, সিনেমা হলের সংখ্যা বাড়ে সেটাই হবে আমাদের বড় পাওয়া।