শুক্রবার থেকে শুরু ইজতেমা, চলছে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি
আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় জমায়েত বিশ্ব ইজতেমা। তাবলীগ জামাতের ধর্মপরায়ণ মুসল্লিদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠবে টঙ্গীর তুরাগ তীর।
বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব উপলক্ষে সেখানকার ১৬০ একরের বিস্তৃত ময়দানে বিশাল কর্মযজ্ঞের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। একই প্রস্তুতিতেই ১৩ থেকে ১৫ জানুয়ারির পর ২০ থেকে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা চলবে।
অন্যান্য বছরের মতো এবারও বিশাল প্যান্ডেল নির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করছেন সাধারণ মুসুল্লিরা। মুসল্লিদের তুরাগ নদী পারাপারের সুবিধার জন্য সেনাবাহিনীর সদস্যরা তৈরি করছে ভাসমান সেতু।
অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে দুইভাগে হচ্ছে ইজতেমা প্রথম পর্ব পরিচালনা করবেন জোবায়ের গ্রুপ আর দ্বিতীয় পর্ব সাদ গ্রুপ।
এবারও উর্দু ভাষায় বয়ান করা হবে বিশ্ব ইজতেমায়। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা মুসল্লিদের সুবিধার্থে বয়ানের সঙ্গে সঙ্গে বাংলা ও আরবি ভাষায় তরজমা করা হবে। বধিরদের বয়ান শোনার জন্য থাকবে আলাদা ব্যবস্থা।
এদিকে আগত মুসল্লিদের জন্য যাতে পুরো সময়টা কিছুটা স্বস্তির হয় সেজন্য বিদ্যুৎ, পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার জন্য সেবা সংস্থাগুলোও কাজ করছে। প্রস্তুত করা হচ্ছে চিকিৎসা সহায়তা দিতে আশপাশের হাসপাতাল।
জানা গেছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ১২টি নলকূপের মাধ্যমে ১২ কিলোমিটার পাইপলাইনের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অজু-গোসলের হাউস নির্মাণসহ পাকা দালানে প্রায় সাড়ে আট হাজার অস্থায়ী টয়লেটের ব্যবস্থা রয়েছে। ময়দানের চাহিদা মোতাবেক ব্লিচিং পাউডার সরবরাহ ও ২৫টি ফগার মেশিনে মশকনিধনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে ঢাকা থেকে এ হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ টিম কাজ করবে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে। হাসপাতালটির পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানিয়েছেন, রোগী পরিবহনের জন্য সার্বক্ষণিক ১৪টি অ্যাম্বুলেন্স মোতায়েন থাকবে।
এদিকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, ইজতেমার সার্বিক নিরাপত্তায় সাড়ে সাত হাজার পুলিশ মোতায়েন থাকবে। সিসিটিভি ক্যামেরা, ওয়াচ টাওয়ার ও রুফটপ থেকে পুরো ইজতেমা ময়দানের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করা হবে।
এ ছাড়া বিশেষায়িত টিমসহ প্রতিটি খিত্তায় সাদা পোশাকে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন বলেও জানান তিনি। অন্যদিকে অগ্নিনির্বাপণের জন্য প্রতি খিত্তায় এবার দুটি করে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র রাখা হবে। তুরাগে নৌ টহলে থাকবে।
এছাড়া তীব্র যানজট থেকে যতটুকু সম্ভব নাগরিকদের স্বস্তি দিতে ইজতেমা চলাকালে সক্রিয় থাকবে গাজীপুর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরা।