সুলতান’স ডাইন নিয়ে অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি: ভোক্তা অধিকার
বহুল আলোচিত সুলতান’স ডাইনের বিরুদ্ধে অন্য কোনও প্রাণীর মাংস ব্যবহারের অভিযোগ নিয়ে শুনানি করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।
সোমবার প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে এই শুনানিতে সুলতান’স ডাইনের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি উপস্থিত থাকলেও অভিযোগকারী ব্যক্তিকে খুঁজে পায়নি জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা।
প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান জানান, সুলতান’স ডাইনে খাসির বদলে অন্য প্রাণীর মাংস ব্যবহারের অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ না হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটিকে অন্য প্রাণীর মাংস ব্যবহারের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া যেতে পারে।
রেস্তোরাঁটি সরেজমিনে তদন্ত এবং অভিযুক্তের মৌখিক ও লিখিত বক্তব্য পর্যালোচনা করে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, সুলতান’স ডাইন ‘মা বাবার দোয়া গোস্ত বিতান, কাপ্তান বাজার’নামক ভেন্ডরের মাধ্যমে খাসির গোস্ত সংগ্রহ করে থাকে। কাপ্তান বাজারে খাসি জবাই করার সময় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মাঝে মধ্যে উপস্থিত থাকেন। ভেন্ডর নিজ দায়িত্বে মাংস অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানে মাংস পৌঁছায়।
সোমবার জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মন্ডল স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৯ মার্চ বিকেল আনুমানিক পৌনে ৪টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান সুলতান’স ডাইনের গুলশান-২ শাখা সরেজমিনে তদন্ত করা হয়। আজ ১৩ মার্চ সোমবার অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের পক্ষে জিএম, এজিএম এবং ওই শাখার ম্যানেজার শুনানিতে উপস্থিত হয়ে মৌখিক ও লিখিত বক্তব্য প্রদান করেন। সন্দেহযুক্ত চিকন হাড়ের ব্যাপারে গত ৯ মার্চ সুলতান’স ডাইনের ম্যানেজার মৌখিকভাবে ১৫০ কেজি খাসির মাংস সংগ্রহের কথা জানান। কিন্তু ভেন্ডর ১২৫ কেজি সরবরাহের কথা জানান। সন্দেহযুক্ত চিকন হাড়ের ব্যাপারে অভিযুক্ত জানান যে, ৭ থেকে ৯ কেজি ওজনের খাসির মাংস তারা ব্যাবহার করেন। আকারে ছোট হওয়ায় এসব খাসির হাড় চিকন হয়।
এদিকে যে মোবাইল নাম্বার (০১৭২৩৩০৯৯০২) থেকে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল তাও বন্ধ পাওয়া যায়।
তাই খাসি বাদে অন্য প্রাণীর মাংসের ব্যবহার সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান সুলতান’স ডাইনকে অন্য প্রাণীর মাংস ব্যবহারের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন ভোক্তার মহাপরিচালক। তিনি বলেন, ‘রেস্টুরেন্টের পরিবেশ পরিস্থিতি নিয়ে ভোক্তা আইনের কোনও ব্যতয় আমরা পাইনি। এছাড়া সেদিন অভিযানে মাংস সংগ্রহ করতে পারিনি। তবে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ তাদের মাংস সংগ্রহ করেছে এবং তারা সেটি পরীক্ষা করছে।’
সুলতান’স ডাইনের মতো ঢাকায় আরও যত বড় প্রতিষ্ঠান আছে তাদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে বলেও জানান অধিদফতরের মহাপরিচালক। তিনি বলেন, ‘মাংসের ক্ষেত্রে সেটি কোথা থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে সেটির রেকর্ড রাখতে হবে। হালাল প্রক্রিয়ায় মাংস সংগ্রহ করতে হবে।’
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সুলতান’স ডাইনের কাচ্চিতে খাসির পরিবর্তে অন্য প্রাণীর মাংস ব্যবহারের অভিযোগ করেন এক ভোক্তা। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেম ব্যাপক ভাইরাল হয়।
পরে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সুলতান’স ডাইনের গুলশান-২ শাখায় অভিযান চালায়। পরে সুলতান’স ডাইনের ওই শাখাকে শুনানির জন্য ডাকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সেই শুনানির প্রেক্ষিতেই সোমবার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ ও সংবাদ সম্মেলন করা হয়।