চায়ের দোকান চালাচ্ছেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া তিন বন্ধু
দিনাজপুরের গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানে অস্থায়ী চা দোকানটি নজর কেড়েছে চা প্রেমীদের। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অধ্যয়নরত তিন বন্ধু এটি পরিচালনা করেন। নাম দিয়েছেন গ্র্যাজুয়েট চা ওয়ালা। পরিবেশবান্ধব পোড়ামাটি ও কাগজের কাপে চা পরিবেশন করায় দিনদিন জনপ্রিয়তা বাড়ছে। প্রতিদিন বিক্রি হয় কমপক্ষে পাঁচ শ’ কাপ চা।
বিকাল চারটা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সরগরম থাকে দোকানটি। এক বন্ধু চা বানান, আরেক বন্ধু ট্রেতে সাজান আর অপর বন্ধু অপেক্ষমাণ চা প্রেমীদের হাতে তুলে দেন চায়ের কাপ।
নতুনত্ব আনতে পরিবেশবান্ধব পোড়ামাটি ও কাগজের কাপ ব্যবহার করেন তারা। পোড়ামাটির কাপে চায়ের দাম ২০ টাকা আর কাগজের কাপে ১৫ টাকা। শীত উপেক্ষা করে নানান পেশার মানুষ আসেন চা পান করতে। অনেকে আসেন পরিবার নিয়ে।
তিন বন্ধু দিনাজপুরের একটি বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়াশোনা করছেন। ব্যতিক্রম কিছু করার চিন্তা থেকেই চায়ের দোকান দেন তারা। শুরুতে অন্য বন্ধুরা বিষয়টি ভালো চোখে না দেখলেও দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠে তাদের ব্যবসা। এখন তারা সফল উদ্যোক্তা।
চা বিক্রির টাকায় লেখাপড়ার খরচ চালানোর পাশাপাশি সঞ্চয়ও করছেন তারা। এটি দেখে শিক্ষিত বেকার যুবকরা উৎসাহিত হবেন বলেও আশা তিন বন্ধুর।
গ্র্যাজুয়েট চা-ওয়ালার প্রধান উদ্যোক্তা সুরুত জামান ইসলাম সুজন বলেন, শুরুতে কেউ ভালোভাবে নেয়নি। পরিবারের সঙ্গে এক প্রকার যুদ্ধ করতে হয়েছিল। পরে অবশ্য পরিবারকে ম্যানেজ করা গেছে। এ ছাড়াও পরিকল্পনা অনেক আগে করলেও আর্থিক সমস্যার কারণে শুরু করা যায়নি। পরবর্তীতে ফাইবারসহ বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে কাজ করে ৮০ হাজার টাকার মূলধন দিয়ে দুই মাসে গ্র্যাজুয়েট চা-ওয়ালার পথচলা শুরু হয়।
গ্র্যাজুয়েট চা-ওয়ালার উদ্যোক্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা তিনজনই প্রথম দিকে মাত্র ৮০ হাজার টাকা মূলধন নিয়ে গ্র্যাজুয়েট চা ওয়ালার যাত্রা শুরু করি। এখন আমরা সবার কাছ থেকে সারা পাওয়ায় আরও অনুপ্রাণিত হচ্ছি। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হলো, আগামী ৭ বছরের মধ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও কয়েকটি শাখা খোলা।