মেসেঞ্জারে নক দিলেই মোবাইল উদ্ধার করে দেন এই পুলিশ কর্মকর্তা
হারানো মোবাইল ফোন উদ্ধার করে রাজবাড়ীতে সাড়া ফেলেছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.রেজাউল করিম। সারা রাজবাড়ী যাকে মোবাইল উদ্ধারকারী নামে চিনে এবং জানে।
জানা গেছে, এখন পর্যন্ত তিনি শতাধিক হারানো মোবাইল ফোন উদ্ধার করে দিয়েছেন।
মো. রেজাউল করিমের কাছ থেকে এমন সেবা পেয়ে উচ্ছ্বসিত ভুক্তভোগীরা। তারা জানান, হারানো মোবাইল উদ্ধার বিষয়ে থানায় গেলে তেমন সাড়া পাওয়া যায় না। আবার কেউ কেউ উদ্ধার বাবদ খরচ দাবি করেন।
কিন্তু মো.রেজাউল করিম শুধু মেসেঞ্জারে একটা রিকোয়েস্ট পেয়ে যেভাবে আন্তরিকতা ও দ্রুততার সাথে রেসপন্স করেন এবং মোবাইল উদ্ধার করে দেন তা অবিশ্বাস্য ব্যাপার।
হারানো মোবাইল ফোন উদ্ধারের আগ্রহের বিষয়ে মো. রেজাউল করিম জানান, অনেকটা ভাল লাগা থেকেই শত ব্যস্ততার মাঝে এই কাজটি তিনি নিয়মিত করে চলেছেন। একজন ব্যক্তি তার হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফিরে পেলে যে আনন্দ পান সেটাই তার বড় প্রাপ্তি।
হারানো মোবাইল উদ্ধারের কাজ শুরু যেভাবে
রেজাউল করিম বলেন, আমার ফেসবুক ওয়ালে গত ৫ জানুয়ারি হারানো একটি মোবাইল উদ্ধারের স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। সেটা দেখে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রাফিন নামে একজন ছাত্র মেসেঞ্জারে আমাকে নক করে জানায় যে, সজিব নামে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জুনিয়রের মোবাইল ফোন হারিয়ে গেছে। আমি দ্রুত রেসপন্স করে ৫ দিনের মাথায় তার মোবাইল উদ্ধার করে দেই।
‘ছাত্রজীবনে টিউশনির টাকায় কেনা মোবাইলটা পেয়ে সে আমাকে ট্যাগ করে ফেসবুকে একটা ধন্যবাদ স্ট্যাটাস দেয়। তার এই স্ট্যাটাস দেখে অনেকেই আমার মেসেঞ্জারে হারানো মোবাইল উদ্ধারের অনুরোধ করতে থাকে। সেই থেকে শুরু। মেসেঞ্জারে তাদের অনুরোধ শুনে আমি আর বসে থাকতে পারিনি। আমি আমার প্রতিদিনের রুটিন কাজের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা অনুরোধগুলো রাখার চেষ্টা করছি’, যোগ করেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, আজ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক হারানো মোবাইল উদ্ধার করে দিয়েছি। কক্সবাজার জেলা থেকে শুরু করে কুমিল্লা, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, দিনাজপুর, রংপুর, নাটোর, বান্দরবান, চট্টগ্রাম, রাজবাড়ীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা অনুরোধগুলো বিবেচনায় নিয়ে মোবাইল উদ্ধার করে দিয়েছি।
পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, অনেকেই মেসেঞ্জারে অসহায়ত্বের কথা বলে, অনেকেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ জানায়। মূলত পুলিশের সেবা সম্পর্কে পজিটিভ ধারণা দেয়ার জন্যই আমার এই প্রচেষ্টা। এখনো প্রায় শতাধিক রিকোয়েস্ট প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে আমি যেহেতু রাজবাড়ী জেলায় আছি তাই এখানকার নাগরিকদেরকেই অগ্রাধিকার দেই।
তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে তিনি জানান, যতদিন সুযোগ থাকবে ততদিন তিনি এভাবেই সাধারণ জনগণকে সেবা দিয়ে যাবেন।
রেজাউল করিম আরও বলেন, মূলত পুলিশের সেবা সম্পর্কে পজিটিভ ধারণা দেওয়ার জন্যই আমার এই প্রচেষ্টা। এখনও প্রায় শতাধিক রিকোয়েস্ট প্রক্রিয়াধীন রয়েছে আমার কাছে। তবে আমি যেহেতু রাজবাড়ী জেলায় আছি, তাই এখানকার নাগরিকদেরই অগ্রাধিকার দেই। রাজবাড়ী জেলার পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান স্যারের উৎসাহ ও নির্দেশনায় এই সেবা দ্রুত দিয়ে যাচ্ছে রাজবাড়ী জেলা পুলিশ।