আমরা বিদেশের পয়সায় কেন চলব: নিপুণকে কড়া জবাব শাকিল খানের
ঢাকাই সিনেমার একসময়ের জনপ্রিয় নায়ক শাকিল খান। প্রায় এক দশকের বেশি সময় ধরে তিনি সিনেমায় অনিয়মিত। মাঝেমাঝে তার দেখা মেলে চলচ্চিত্রের নানা অনুষ্ঠান-আয়োজনে।
সর্বশেষ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনেও অংশ নিয়েছিলেন বন্ধু রিয়াজ ও ফেরদৌসদের সঙ্গে। এরপর আর তেমন করে কোথাও পাওয়া যায়নি তাকে।
সম্প্রতি এক আলোচনায় জানালেন সিনেমা নিয়ে নানান হতাশা ও ক্ষোভের কথা। ভারতের সিনেমা আমদানি নিয়ে চলমান যে তর্কবিতর্ক, সে নিয়ে শাকিল খান বিরক্ত।
তিনি মনে করেন, কোনো শর্তেই বিদেশি সিনেমা এ দেশে অবাধে মুক্তি দেওয়া উচিত হবে না। সেই সঙ্গে এই নায়ক ক্ষোভ প্রকাশ করলেন শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তারের একটি বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায়।
নিপুণ সম্প্রতি বলেন, বাংলাদেশে ‘পাঠান’ বা ভারতীয় সিনেমা আমদানি হলে সেগুলো থেকে যে মুনাফা হবে তার ১০ শতাংশ যেন শিল্পী সমিতিকে দেওয়া হয়। তার এ মন্তব্য অনেক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
এবার শাকিল খানও বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি বলেন, ‘দায়িত্বশীলদের থেকে এ ধরনের মন্তব্য কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। দীর্ঘদিন এ দেশের শিল্পীরা বিদেশি চলচ্চিত্র আমদানি ঠেকাতে মাঠে নেমে আন্দোলন করেছেন। এখন সেসব বিদেশি সিনেমার মুনাফা দিয়ে দেশের চলচ্চিত্র শিল্পীদের চলতে হবে! এটা কেমন কথা? আমি এ মন্তব্যের নিন্দা জানাই।
প্রথমত, এ দেশে বিদেশি সিনেমা আমদানির পক্ষে আমি না। আগে তো দেশের সিনেমার কাঠামো মজবুত হোক। দেশের শিল্পীদের ধারাবাহিকভাবে কাজের ব্যবস্থা হোক। তারপর বলতে চাই, দেশের শিল্পীরা এখনও এত স্বস্তা হয়ে যাননি যে বিদেশি সিনেমার মুনাফা ভোগ করতে হবে। বিদেশের পয়সায় কেন চলব আমরা? কতদিন চলব? কেন এ ধরনের কথা বলা হচ্ছে, আমি জানি না। এতে চলচ্চিত্র শিল্পী ও সামগ্রিক ইন্ডাস্ট্রিই ছোট হচ্ছে বলে আমার মনে হয়।’
বর্তমান চলচ্চিত্রের ব্যবসায়িক অবস্থা ও দৃশ্যপট নিয়েও শাকিল খানের ক্ষোভ প্রকাশ পেল। তিনি মনে করেন, বাজে রাজনীতির শিকার ইন্ডাস্ট্রি। ‘বিয়ের ফুল’ খ্যাত এই নায়ক বলেন, ‘সবাই নিজের মতো করে নিজের স্বার্থ দেখছি আমরা। চলচ্চিত্র শিল্প নিয়ে ভাবছি না। আমি আমাকেও এ তালিকা থেকে বাদ দিচ্ছি না। আমারও হয়তো অনেক কিছু করার ছিল। করতে পারিনি বা পারছি না। আমরা সিনেমায় ফিরতে চাই। কিন্তু কোথায় ফিরব? দিনে দিনে শত শত সিনেমা হল গুটিকয় হলের ব্যবসার ইন্ডাস্ট্রিতে রূপ নিয়েছে। হাতে গোনা কয়েকটি সিনেপ্লেক্স খানিকটা আশা জাগালেও সেগুলোয় সব ধরনের সিনেমা চলছে না। নির্দিষ্ট কিছু সিনেমা তারা দেখায়। বহুমাত্রিক সিন্ডিকেট দেখা যাচ্ছে এখানে। নানানরকম ফাঁকা আওয়াজও চলে সিনেমার ব্যবসা নিয়ে। এসব কারণে প্রযোজকরা এখন আর লগ্নি করার সাহস পান না।’
শাকিল খানও প্রযোজনা করবেন পরিকল্পনা করেও পিছিয়ে যাচ্ছেন বারবার। তবু সবকিছু ছাপিয়ে শিগগিরই কিছু সুখবর নিয়ে হাজির হবেন তিনি। চলতি বছরই ঘোষণা আসবে কিছু নতুন কাজের। শাকিল খান মনে করেন, ‘এখনও সবাই মিলে চাইলে আমরা চলচ্চিত্র শিল্পটাকে আবার দাঁড় করাতে পারব। বাজার চাঙা করতে পারব।’