‘রায়হান রাফি প্রায় সময়ই বলতো তুমি তো আমার সঙ্গে দেখা করলা না’
কোটি টাকা দিলেও পরিচালক রায়হান রাফির সঙ্গে কাজ করবেন না বলে জানিয়েছেন উঠতি মডেল ও অভিনেত্রী সায়মা স্মৃতি। একই সঙ্গে এই পরিচালকের মন মানসিকতা নিচু উল্লেখ করে ক্ষোভও ঝেড়েছেন তিনি।
রাফির সঙ্গে কাজ না করা প্রসঙ্গে সায়মা স্মৃতির ভাষ্য, ‘অবশ্যই কোন না কোন কারণ তো আছেই। প্রথম কারণ যদি বলি তাহলে বলবো, একজন মানুষ হিসেবে প্রথমেই তাকে আমার অপছন্দ। তাকে আমার ভালো লাগে না। দ্বিতীয়ত হচ্ছে এর পেছনে একটা ঘটনা আছে।’
আজ শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে সেই ঘটনা উল্লেখ করে সায়মা স্মৃতি দাবি করেছেন, ‘‘ঘটনাটা প্রায় সাত মাস আগের। তখন রাফি ভাইয়ার ‘পরাণ’ সিনেমা রিলিজ পেয়েছে। উনার সঙ্গে আমার হাই-হ্যালো হতো, প্রায় সময়ই বলতো তুমি তো আমার সঙ্গে দেখা করলা না। মুক্তির দুইদিন পর তিনি আমাকে ফোন করে বলেন তার সঙ্গে দেখা করার জন্য, তিনি সকালে অফিসে থাকবেন।
এরপর আমি বললাম, ঠিক আছে, আমি আসবো। সেদিন আমি চিন্তা করলাম, হয়তো কোন কাজের জন্য বা মিটিংয়ের জন্য আমাকে ডাকছেন কিংবা কোন পরামর্শ দেওয়ার জন্যও হতে পারে। এমনটা ভেবে আমি সেদিন বের হলাম উনার সাথে দেখা করার জন্য। উনি উনার অফিসের ঠিকানা দিলেন। যেহেতু ঈদের সময় ছিল তাই রাস্তা ফাঁকা, আমি পাঠাও কল দেই। অন দ্য ওয়েতে আমি বাইক এক্সিডেন্ট করি। দুই থেকে তিন সেকেন্ডের মধ্যে আমি যেন আমার চোখের সামনে মৃত্যুকে দেখতে পাচ্ছিলাম। মুহূর্তের জন্য আমি নিজেকে হারিয়ে ফেলছিলাম। এরপর আমি তাকে বিষয়টি জানাই এমনকি আমি কিছু ছবিও পাঠাই তাকে। সে রিপ্লাই দিয়েছে, ‘তুমি এক্সিডেন্ট করেছো, এটা তোমার মাথাব্যথা। আমি কি তোমাকে বলেছিলাম যে, বাইকে আসো?’’
এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সায়মা স্মৃতি বলছেন, ‘এটা কি একজন নির্মাতার কথা হতে পারে? আমি তাকে ঘটনা জানানোর পর সাথে সাথেই পল্টি মারল। এরকম পল্টি মনে হয় না যে রাস্তার পকেটমাররাও মারে। কারণ, তাদের মধ্যেও মানবিকতা বলতে কিছু আছে কিন্তু এই নির্মাতার? একজন অপরিচিত মানুষও ছুটে যায় কোন এক্সিডেন্টের কথা শুনলে আর সেখানে সে মুহূর্তেই পল্টি।
সে এমনই একজন মানুষ যে কিনা এরপর একদিন খোঁজও নেয়নি আমার যে, আমি কেমন আছি বা কি অবস্থায় আছি! একটা মানুষ তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে এক্সিডেন্ট করলো অথচ তার কোন ভ্রূক্ষেপ নেই। আমি ঐ এক্সিডেন্টে মারা যেতে পারতাম, তাতে অবশ্য তার কিছু যায় আসতো না, আমার কাছে ঠিক তেমনটাই মনে হয়েছে। আমি তো বাসা থেকে বের হতে চাইনি, উনি-ই আমাকে বের করেছে। বের হয়ে এক্সিডেন্ট করলাম আর উনি মুহূর্তেই পল্টি মারলো। এতটা নিচু মন মানসিকতার মানুষ আমি আগে কখনও দেখিনি। একজন নির্মাতার বিহেভিয়ার যদি এমন হয় তাহলে তো আর কিছু বলার নেই, এরচেয়ে তো পকেটমারের কাছে বসে থাকাও ভালো। একজন নির্মাতার মানবিক দিক বলেও কিছু থাকা উচিত। ভালো মানুষ হওয়া উচিত। আমি অনেক গুণী, ভালো ভালো নির্মাতাদের সাথে কাজ করেছি তারা তো কখনও এমন করেন নি। অনেক সিনিয়রদের সঙ্গে মিশেছি, শিখেছি অনেক কিছু। তারা আমাকে সবসময় বলেন, আগে ভালো মানুষ হও এরপর ভালো অভিনেত্রী। আর ভালো অভিনেত্রী মানেই তুমি সবার মনের নায়িকা।’
‘ইন্টারনেটের দুনিয়ায় জানতে হবে, কোথায় আপনার থামতে হবে’ ট্যাগ লাইনে অনম বিশ্বাস পরিচালিত গ্রামীণফোনের বিজ্ঞাপন দিয়ে বছর দুয়েক আগে দর্শকমহলে পরিচিতি পান সায়মা স্মৃতি। বছর পাঁচেক আগে অমিতাভ রেজা চৌধুরীর বিজ্ঞাপন দিয়ে শোবিজে হাতেখড়ি। এরপর রেদওয়ান রনি, নুহাশ হুমায়ূন, তানিম রহমান অংশু, সাফায়েত মনসুর রানার মত পরিচালকদের নির্মাণে কাজ করেছেন বিজ্ঞাপন ও বেশ কিছু নাটকে। গেল বছরের শুরুতেই নাম লেখান সিনেমায়, বর্তমানে কাজ করছেন চারটি সিনেমায়।